
বিশেষ প্রতিবেদক ১৭ আগস্ট ২০২৫ , ৬:৪১:০৮ প্রিন্ট সংস্করণ
অনিয়মের আখড়া বরিশাল জেলার উজিরপুর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার অফিস যেনো নিয়মিত ঘুষের হাটবাজার বসিয়েছে।

অফিসের খাস লোক হিসেবে পরিচিত কার্যালয়ের অফিস সহায়ক, ও মোহরার অফিস কর্মচারীদের ম্যানেজ করলেই হয়ে যায় সব কাজ। সিন্ডিকেটের রোষানলে দলিল নিবন্ধন প্রক্রিয়ায়, প্রতারণা ও জালিয়াতি, দায়িত্ব পালনে অবহেলা সমক্ষেপণ ইত্যাদি নানা কৌশলের ফাঁদে ফেলে অনিয়মের মাধ্যমে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করার মত সুস্পষ্ট অভিযোগ উঠেছে উজিরপুর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রারের বিরুদ্ধে। অতিরিক্ত কমিশনের মাধ্যমে কর্মকর্তা কর্মচারী সহ কতিপয় দালালদের নিয়ন্ত্রিত সিন্ডিকেটের কালো থাবায় পড়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে এই উপজেলার সাধারণ মানুষদের। হয়রানিতে আরও যোগ হয়েছে কিছু অসাধু দলিল লেখক, ভুমি নিবন্ধন ক্ষেত্রে ও সরকারি ফি ব্যতীত জমির মূল্যের উপর অতিরিক্ত কমিশন দিতে হয়। এখানে দলিল রেজিস্ট্রেশন, নামজারি এবং অন্যান্য আইনী কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য অতিরিক্ত উৎকোচ নিয়ে থাকেন। একইভাবে অনন্য সেবা খাতেও দিতে হয় কমিশন।
অভিযোগ রয়েছে, দলিল লেখকদের অতিরিক্ত অর্থ আদায়: সাধারণ মানুষ জমি রেজিস্ট্রেশন করতে গেলে, দলিল লেখকরা সরকারি ফির বাইরে অতিরিক্ত অর্থ দাবি করে। ভূমি রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ায় বিলম্ব: নানা অজুহাতে রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত করা হয়, যার ফলে জনসাধারণকে হয়রানির শিকার হতে হয়।
সিল ও স্বাক্ষর জালিয়াতি: কিছু অসাধু কর্মচারী কর্তৃক জাল সিল ও স্বাক্ষর ব্যবহারের অভিযোগও রয়েছে। ভূমি রেজিস্ট্রেশন সংক্রান্ত জটিলতা: ভূমি রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়ায় নানা ধরনের জটিলতা তৈরি করে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করা হয়।
শিকারপুর ইউনিয়ন এবং সাতলা ইউনিয়নের স্থানীয় ব্যক্তিবর্গের সাথে অনুসন্ধানী টিমের কথা হলে তাঁরা বলেন, ‘অফিস কেন্দ্রিক দালালদের দৌরাত্ম ব্যাপক হারে বেড়েছে। তাদের মাধ্যমে সরকারি নির্ধারিত ফির বাইরে ও ক্ষেত্রবিশেষে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত খরচ’।
কিছু ক্ষেত্রবিশেষে দাতা/গ্ৰহীতাদের দলিলে জমির প্রকৃত বিনিময় মূল্য বেশি হলেও তা সাব-রেজিস্টার ও দলিল লেখকদের সহায়তায় কম দেখানো হয়। যে কারণে প্রকৃত রেজিস্ট্রেশন ফি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার।
কয়েকজন দলিল লেখকদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, সরকারি নির্ধারিত ফির বাইরে অফিসের ঝামেলা মেটানো নামে যে অতিরিক্ত টাকা আদায় করা হয় তাকে সেরেস্তা খরচ বলা হয়।
এ ব্যাপারে উজিরপুর উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার মোঃ নকীব আরমান সেরনিয়াবাতের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি।
অফিস মোহরার জসিম উদ্দিন সোহাগ বলেন, যেখানে একটি সাতলা ইউনিয়নের ১০ শতাংশ নাল জমির দানপত্র দলিল রেজিস্ট্রার খরচ হিসেবে বাধ্যতামূলক ৯% খরচ উল্লেখ করেন, যার প্রকৃত রেজিস্ট্রেশন খরচ ৭.৫%। উক্ত ব্যাখ্যাটি মোহরার জসিম উদ্দিন সোহাগ নিজেই দিয়েছেন অতিরিক্ত ১.৫% যায় কোথায়? এবং অফিস সহায়ক হালিম মৃধা’র সাথে অনুসন্ধানী টিমের মুঠোফোন কথা হয়। উক্ত বিষয়ে তার কাছে জানতে চাইলে তিনি সরোয়ার নামক দলীল লেখকের সখ্যতায় ৯% খরচের কথা বলেন, যেখানে প্রকৃত খরচের থেকে অধিক।
এইসব অনিয়মের লেনদেন, অফিস কর্মচারী সেবাগ্ৰহীতাদের মাঝে অতিরিক্ত খরচ আদায়ের স্বচিত্র অনুসন্ধানী টিমের নিকট রয়েছে যা পরবর্তী ধারাবাহিক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে প্রকাশিত হবে।

















